মো. আরকান, পেকুয়া:

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের শেখের কিল্লা ঘোনা গ্রামে বহুদিনের অবহেলিত একটি ড্রেন অবশেষে সংস্কারের কাজ শুরু করেছে এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় নাকাল স্থানীয়দের স্বস্তি ফেরাতে স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে এসেছেন প্রায় ৪০ জন তরুণ।

বুধবার (১১ জুন) সকাল থেকে স্কেভেটরের সহায়তায় প্রায় ৪০০ মিটার দীর্ঘ ওই ড্রেনের আবর্জনা অপসারণ এবং পুনঃখননের কাজ শুরু হয়। একমাত্র পানি নিষ্কাশনের পথ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ এই ড্রেনটি বহু বছর ধরে অব্যবস্থাপনায় পরিণত হয়েছিল ময়লার ভাগাড়ে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৬০০ পরিবারের বসবাস এই এলাকায়। দিন দিন বাড়ছে বহুতল ভবন, কিন্তু ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি একটুও। বর্ষায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হতো জলাবদ্ধতা, ঢুকে যেত বসতঘরে পানি। এমনকি শত বছরের পুরোনো কবরস্থানও তলিয়ে যেত। সম্প্রতি পাঁচটি নতুন দাফন করা লাশ ভেসে ওঠে পানিতে, যা এলাকাবাসীর মধ্যে শোক ও ক্ষোভের জন্ম দেয়।

বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহুবার প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে এলাকার যুবদল সভাপতি কামরান জাদিদ মুকুট ও স্থানীয় যুবনেতা জয়নাল আবেদীন সংস্কারের নেতৃত্ব দেন।

স্থানীয় যুবনেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, “এই খালটি সরকারি ১ নম্বর খাস খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করে টেকসই ড্রেনেজ ব্যবস্থার দাবি আমরা বহুদিন ধরে জানিয়ে আসছি। সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহ উদ্দিন আহমদকেও বিষয়টি জানিয়েছি।”

পেকুয়া উপজেলা যুবদল সভাপতি কামরান জাদিদ মুকুট বলেন, “খালটি ছিল পুরোপুরি বন্ধ। আমাদের উদ্যোগে কিছুটা হলেও পানির প্রবাহ ফিরেছে। এটি স্থানীয়দের বহুদিনের দুর্ভোগ লাঘবে আশার আলো দেখাচ্ছে।”

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম. বাহাদুর শাহ বলেন, “খালটির সংস্কার অত্যন্ত জরুরি। আমি বর্তমানে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে রয়েছি, তবে এলাকাবাসী আমাকে অবহিত করেছে। প্রয়োজনে সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে প্রস্তুত আছি।”

ড্রেন সংস্কারকে কেন্দ্র করে গ্রামে নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। স্থানীয়রা মনে করেন, সরকারি সহযোগিতা ও নজরদারির মাধ্যমে এই উদ্যোগই হতে পারে জলাবদ্ধতা সমস্যার স্থায়ী সমাধান।